বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরই হাজার হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়ে থাকেন। এ দেশ থেকে বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী যেতে আগ্রহী তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া। এসব দেশে যেতে হলে কী কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে তা জানিয়ে দেবো আজ। আমাদের এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়লে বুঝতে পারবেন।

Study in the UK

যুক্তরাজ্যের বা United Kingdom সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, Higher Secondary Certificate (HSC) বা সমমানের পাশের পর আপনি স্নাতক করতে যুক্তরাজ্যের যেতে পারেন। এ ছাড়া পোস্ট, গ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স বিভিন্ন ধরনের সার্টিফিকেট, কোর্স বা diploma পড়তে যেতে পারেন। তবে আপনি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কী কোর্স করতে যাবেন সেটি আগে থেকেই ঠিক করতে হবে।

কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষতার প্রমাণ পত্র থাকতে হবে। এর জন্য নির্ধারিত কিছু টেস্ট বা পরীক্ষা রয়েছে, যেমন IELTS অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে এসব টেস্টে অংশ নিতে পারবেন আপনি।

পড়াশুনা IELTS
International English Language Testing System

এ ছাড়া দরকার হবে Academic recommendation লেটারেও। শিক্ষার্থী হিসেবে ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনার অবশ্যই স্বীকৃত কোনও একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কোনও একটি কোর্সের অফার থাকতে হবে।

Confirmation of Acceptance for Studies (CAS) বা সংক্ষেপে সিএএস আপনাকে ভিসা আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। পড়াশোনা এবং যুক্তরাজ্যে আপনার জীবন ধারণের খরচ জোগানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে।

এর পরিমাণ কত হবে সেটি নির্ভর করবে আপনি কোন বিষয়ে পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন এবং কোর্সটির দৈর্ঘ্য কত তার উপরে। আপনার কত খরচ পড়বে সেটি আপনার অফার লেটার বা কনফারমেশন অফ অ্যাকসেপট্যান্স এর মধ্যে উল্লেখ করা থাকবে।

আরো পড়ুনঃ ডিসি পাওয়ার সাপ্লাই (DC Power Supply) Part-1

তবে সাধারণত এক শিক্ষাবছর বা ৯ মাসের পড়াশোনা এবং UK থাকা খাওয়ার খরচ নির্বাহ করার মতো অর্থ থাকতে হবে। পাসপোর্ট, পড়াশোনা ও জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের প্রমাণপত্র, যক্ষ্মা পরীক্ষার সার্টিফিকেট, আপনার পড়াশোনার অর্থায়ন যদি আপনি ছাড়া অন্য কেউ করে থাকে তাহলে তাদের অনুমতি পত্র ইত্যাদি নথি অবশ্য দেখাতে হবে।

পড়াশোনা করার জন্য পাসপোর্ট
পড়াশোনা করার জন্য পাসপোর্ট

কোর্স শুরু হওয়ার অন্তত ৬ মাস আগে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আপনি আপনার স্ত্রী বা স্বামী এবং সন্তানদের আপনার সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনার কোর্স যদি 2024 সালের পহেলা জানুয়ারির পর শুরু হয় তাহলে আপনার সঙ্গীকে নিতে হলে আপনাকে অবশ্যই PhD বা কোনও গবেষণা বিষয়ক উচ্চ ডিগ্রির শিক্ষার্থী হতে হবে।

Study in U.S.A

যুক্তরাষ্ট্রে (United States) পড়াশোনা করতে হলে প্রথমেই একটি কলেজ বা ইউনিভার্সিটিও সাবজেক্ট খুঁজে বের করতে হবে। যেটা আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী। এই কাজটি আপনাকে করতে হবে শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার এক থেকে দেড় বছর আগে ।

USA পড়াশুনা
USA পড়াশুনা

এক্ষেত্রে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে আপনি কোন state বা অঙ্গরাজ্যে থাকতে চান, কোন কলেজ বা ইউনিভার্সিটি আপনার সাথে সবচেয়ে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ, আপনার আর্থিক সহযোগিতা দরকার কিনা, ভর্তি এবং বৃত্তি আবেদনের শেষ তারিখ কবে, ইত্যাদি নানা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। ভর্তির আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সার্টিফিকেট দরকার হবে।

সেগুলো ইংরেজি ভাষায় হয়ে না থাকলে ইংরেজিতে অনুবাদ করে তৈরি করতে হবে। ইংরেজি ভাষার দক্ষতার সার্টিফিকেট থাকতে হবে. Academic এবং অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট ও রিকমেন্ডেশন লেখার দরকার হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন state এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে খরচ ভিন্ন, প্রতিযোগিতা বেশি হলেও এখানে বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই আপনার আর্থিক পরিকল্পনা যত দ্রুত সম্ভব শুরু করুন।

মনে রাখতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন এবং বৃত্তি আবেদন একই সাথে শুরু হয়।

ভর্তি এবং আর্থিক নিশ্চয়তার পরের ধাপ হচ্ছে ভিসার জন্য আবেদন। তবে ভিসা আবেদন করতে হলে অবশ্যই আপনার কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফার লেটার থাকতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনের জন্য আপনার বিভিন্ন রেকমেন্ডেশন লেটার এস এ লেখা এবং বিভিন্ন ধরনের Academic Certificate পৌঁছানোর মতো বিষয় রয়েছে।

তাই এটি সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে করতে হবে।

Study in Canada

কানাডা তে পড়াশুনা
কানাডা তে পড়াশুনা

কানাডায় যেতে হলেও সবার আগে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোর্স খুঁজে বের করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোঁজার বিষয়ে EduCanada নামে কানাডার সরকারি ওয়েবসাইট বা আপনি যে state এ পড়াশোনা করতে আগ্রহী, সেই state শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এবং The Canadian Bureau for International Education (CBIE) এর ওয়েবসাইটে গিয়ে খোঁজ নিতে পারেন।

সেখানে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা এবং বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়ার পর আপনাকে পছন্দের বিষয়ে আবেদন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স শুরুর অন্তত ১ বছর আগে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

Canada, ইংরেজি ও ফরাসি দুই ভাষাতেই পড়াশোনা করা সম্ভব। ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার সার্টিফিকেট থাকতে হবে। এক্ষেত্রে IELTS গ্রহণযোগ্য। সেই সাথে দরকার হবে Statement of Purpose বা আপনি কেন কানাডায় পড়তে যেতে চাইছেন, যে বিষয়ে পড়াশোনা করতে চাচ্ছেন, সেটি কেন চাচ্ছেন, আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী ইত্যাদি বিষয় সংক্রান্ত একটি লেখা।

আর এ সব কিছুর সাথে দরকার হবে recommendation লেটার, যেটা আপনার সরাসরি শিক্ষক দিয়ে থাকেন। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপনি আবেদন করতে চান তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা ওই নির্ধারিত বিষয় সম্পর্কে আবেদনের ফি, টিউশন ফি, স্বাস্থ্য, বীমা, বাড়িভাড়া এবং কানাডায় বসবাসের খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবে।

কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপনাকে নিতে আগ্রহী হলে তারা একটি লেটার অফ অ্যাকসেপট্যান্স পাঠাবে। যেটি আপনার স্টাডি পারমিট আবেদনের সময় দরকার হবে। বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য কানাডায় বৃদ্ধির কিছু ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এগুলো অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ। তাই আগে থেকেই আপনার জন্য কোন বৃত্তির সামঞ্জস্যপূর্ণ সেটির সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে আবেদন করতে পারেন৷

কানাডায় পড়তে যাওয়ার জন্য Study permit দরকার হবে। এর জন্য আবেদন করতে হলে কোনো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লেটার অফ অ্যাকসেপট্যান্স দরকার হবে।

একই সাথে আপনার আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ পত্র এবং আপনার সাথে যদি নির্ভরশীল হিসেবে আপনার স্বামী বা স্ত্রী এবং সন্তানরা যেতে চায় তাহলে তাদের খরচ বহন করার মতো অর্থ থাকারও প্রমাণ পত্র এবং অন্যান্য দরকারি নথি প্রয়োজন হবে।

Study in Australia

অস্ট্রেলিয়াতে আপনি কোথায় পরতে চান, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার জন্য উপযুক্ত হবে তা আগে ঠিক করতে হবে। বিভিন্ন কোর্সে বা বিষয় পরার জন্য আলাদা শর্ত থাকে। তবে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার সার্টিফিকেট অবশ্যই থাকতে হবে।

Study in Australia
Study in Australia

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে স্নাতক পর্যায়ের একটি ডিগ্রি থাকতে হবে। আপনি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে চান তাঁদের সাথে যোগাযোগ করলে ভর্তি এবং খরচ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তাঁরা সরবরাহ করবে।

সব নিয়ম মেনে আবেদন করা হলে সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। আপনি ভর্তির জন্য যোগ্য বিবেচিত হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আপনাকে একটি Letter of offer এবং একটি Acceptance ফর্ম দেওয়া হবে। এর পরবর্তী ধাপ হচ্ছে ভিসা আবেদন।

অস্ট্রেলিয়াতে শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদনের জন্য আপনার অবশ্যই বৈধ Confirmation of Enrolment অর্থাৎ ভর্তির নিশ্চয়তা সম্বলিত নথি থাকতে হবে। আপনার কোর্স শুরু হওয়ার অন্তত ৮ সপ্তাহ আগে অবশ্যই অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী 2023 সালের অক্টোবর থেকে শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদনের সময় যে পরিমাণ তহবিল দেখাতে হয় তা বাড়বে। 2023 সালের পহেলা জুলাই থেকে স্টুডেন্ট ভিসা যাঁদের আছে, তাঁরা 15 দিনে 48 ঘন্টা করে কাজ করতে পারবে।

এ ধরনের নানা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ জানতে আমাদের AsiaEduWeb ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন। এই সম্পর্কিত কোন তথ্য জানতে চাইলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন।

Disclaimer

The information in this Article, sourced from Wikipedia and other online resources, is provided “as is”. Always cross-reference for validity. Read Our DMCA.

Categorized in:

Information,

Last Update: জানুয়ারি 1, 2024

Tagged in:

,